আত্ম অলৌকিক শক্তি জাগ্রত করার উপায়ঃ
সর্ম্পূন এই ব্রহ্মান্ডে এক অদ্ভুত, অলৌকিক শক্তি আছে যা সৃষ্টির সমুহ পদার্থের উপর সমানভাবে প্রভাবশালী। এই অলৌকিক শক্তি প্রত্যেক মানুষের মাঝেই সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে। এই শক্তি আমাদের প্রতিটি সময় প্রভাবিত করে বিশেষ করে আমরা যখন’ই অন্যমনষ্ক থাকি, বা আনমনা ভাবে কিছু ভাবি। মহাকাশে বিচরণকারী গ্রহ নক্ষত্রের মধ্যেও এই শক্তি বিদ্যমান। ফলে এই সব গ্রহ নক্ষত্রের গতি প্রকৃতির উপর মানুষের ভাগ্য ও শারীরিক এবং মানুষিক কার্যকলাপ নির্ভর করে।
এই ভাবে বিভিন্ন রং, ধাতু, এবং রত্নেরও মানুষের উপর প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতা রয়েছে। প্রত্যেক জড়, অজড়, সজীব, নির্জীব পদার্থেও এই শক্তি আছে। মানুষ যে কোন প্রানীকে সম্মোহিত করে তার দ্বারা মনমত কাজ আদায় করে নিতে পারে। এছাড়া যেমন চুম্বক লোহাকে আর্কষণ করে তেমনি মানুষও তার সম্মোহন শক্তিদ্বারা যে কোন চেতন পদার্থকে আর্কষন করতে পারে। শুধু চেতন পদার্থই নয়, জড়বস্তুকেও সে তার শক্তি বলে প্রভাবিত করতে পারে।
এই অদ্ভুত, অদেখা, অলৌকিক শক্তির জন্যই এই পৃথিবীর সকল প্রানী ও জড় এবং চেতন পদার্থ পৃথক পৃথক হওয়া সত্ত্বেও সৃষ্টিরই এক অভিন্নরূপ। বৈজ্ঞানিকেরা একে ব্রহ্মান্ডীয় উর্জা বলেছেন।
প্রাচীনকালে মুনি ঋষিরা কঠোর তপস্যাবলে এই অলৌকিক শক্তির কিছু অংশ লাভ করতে পেরেছেন। যার দ্বারা তাঁরা অসাধ্য সাধন করতে পারতেন। এমনকি স্পর্শ করা মাত্র-মানুষের জীবন ও বিচার ধারায় পরিবর্তন করে রোগমুক্ত করে দেওয়াও তাদের পক্ষে সম্ভব ছিলো। খ্রীষ্ট্রানদের পবিত্র গ্রন্থ বাইবেল অনুসারে প্রভু যীশু কেবল হাতের স্পর্শেই লোকের দুঃক্ষ-কষ্ট, রোগ, শোক, নিবারণ করতে পারতেন। অসাধ্য রোগও তার হাতের স্পর্শে দুর হতো। আসলে এটা সেই আশ্চার্য জনক শক্তি যা সারা পৃথিবীতে ব্যাপ্ত আছে এবং যার কিছু অংশ যীশু লাভ করেছিলেন।
সংসারের সমস্ত প্রানী বা জীব জগতের সঙ্গে ব্রহ্মান্ডের সমস্ত গ্রহ নক্ষত্রের একটি বিদ্যুৎ চুম্বকীয় শক্তির অবশ্যই ঘনিষ্ট সম্বন্ধ আছে, যার দ্বারা প্রানী জগত পরিচালিত হয়। সমগ্র প্রানী জগতকে বলা যায় এর গ্রাহক। যার ফলে আমাদের অবচেতন মনে ব্রহ্মান্ডীয় চেতনার মিলন হয় এবং তার ফলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু প্রানী অলৌকিক শক্তি সম্পন্ন হয়।
মোটামুটি ভাবে এই সর্বব্যাপক অতীন্দ্রিয় শক্তি মানুষের মনকে প্রভাবিত করে। ফলে যে সব মনুষের মন শক্তিশালী সেই সব মানুষই অতীন্দ্রিয় শক্তির সংগ্রাহক হয়।
যেসব মানুষ নির্বকার, বাসনা ও কামনা রহিত এবং দৃঢ়সংকল্পি সেই সব মানুষ নিজমনের শক্তির পূর্ণ বিকাশ সাধন করে অলৌকিক শক্তি পেতে পারে। প্রতিটি মানুষের মনেই এক অদ্ভুত চেতনা আছে যা তার অবচেতন মনে লুকিয়ে থাকে এই অবচেতন মনই সমস্ত অদ্ভুত শক্তির কেন্দ্র। মানুষ সাংসারিক মোহজালে আবদ্ধ থাকার দরূন তার সুপ্ত মনের বিকাশ ঘটাতে পারে না, তাই সে সাধারণ ভাবে জীবন কাটায়। কিন্তু যে মানুষ নিজের অবচেতন মনের শক্তিকে চিনে তাকে জাগাতে পারে এবং তার উপযোগ করতে পারে সেই ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষ থেকে মহামানবে পরিনত হয়।
যদি মানুষ তার মনকে শক্তিশালী ও বিকাশিত করতে পারে তবে দুনিয়ার যে কোন কাজই তার পক্ষে করা সম্ভব হয়। হিপনোটিজম, ম্যাসমেরিজম, বশীকরণ, মোহিনীবিদ্যা, টেলিপ্যাথি ইত্যাদি তো মনের সেই অগাধ শক্তিরই উদাহরণ মাত্র। এই শক্তি দ্বারা মানুষ পৃথিবীর সমস্ত শক্তির উপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করতে পারে। এর জন্য প্রয়োজন দৃঢ় সঙ্কল্প, অটুট আত্ম বিশ্বাষ ও মনের একাগ্রতা, সঠিক গুরুর দিক নির্দেশনা, তবেই মানুষ হতে পারবে মহামানব, পাবে সেই অলৌকিক শক্তির সন্ধান যার দ্বারা সে পৃথিবীর যে কোন কাজ অবলীলাক্রমে করতে পারবে।